দেশের আকাশে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। বাংলাদেশে আগামী ৭ জুন ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। প্রত্যেকেই চান কোরবানির ঈদ যেন আনন্দময় হয়। তাই নিজের জমানো টাকা থেকে অনেকে কোরবানি করে থাকেন।
কোরবানি স্বাভাবিক কোনো আমল নয়। এর সঙ্গে মিশে আছে অনেক তাৎপর্য। এতে পশু জবাই করার মাধ্যমে রয়েছে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের অফুরন্ত সুযোগ। হজরত যায়েদ বিন আরক্বাম (রা.) বলেন, রাসুল (স.)-এর সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! এই কোরবানিটা কী? রাসুল (স.) জবাবে বললেন, তোমাদের পিতা ইব্রাহিম (আ.)-এর সুন্নত বা আদর্শ।
অনেকেই মৃত আত্মীয়স্বজনের নামে কোরবানি দিতে চান। তখন প্রশ্ন আসে মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি করা যাবে কি না।
ইসলামি শরিয়তে, মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানি দেয়া জায়েজ। এর বিনিময়ে সওয়াব পাবেন তারা।
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসলুল্লাহ (রা.) এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, হে রাসুল! আমার মা হাঠাৎ ইন্তেকাল করেছেন। কোন অসিয়ত করে যেতে পারেননি। আমার মনে হয় তিনি কোন কথা বলতে পারলে অসিয়ত করে যেতেন। আমি যদি এখন তার পক্ষ থেকে সদকা করি তাতে কি তার সওয়াব হবে?
তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। (সহীহ বুখারি, হাদীস নং ১৩৩৮; সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ১০০৪)।
কতিপয় আলেমের মতে, মৃত ব্যক্তির অসিয়ত ছাড়া এমনিতেই তার নামে নফল কোরবানির নিয়তে কোরবানি দিলে কোরবানিদাতা ব্যক্তির নিজের ওয়াজিব কোরবানিটিও আদায় হয়ে যাবে। তবে প্রথম সুরতটিই অধিকতর নিরাপদ। (রদ্দুল মুহতার ৯/৪৮৪)
কোনো মৃত ব্যক্তির নামে দেয়া কোরবানির গোশত নিজেরাও খেতে পারবেন, আত্মীয়-স্বজনকেও দিতে পারবেন।
তবে মৃত ব্যক্তি কোরবানি করার অছিয়ত করে থাকলে, সেই কোরবানি তার ত্যাজ্য সম্পদের তিন ভাগের এক ভাগ থেকে দেয়া ওয়াজিব এবং এর গোশত নিজেরা খেতে পারবেন না। গরিব-মিসকিনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে।
মৃত ব্যক্তির ত্যাজ্য সম্পদ না থাকলে, কোরবানি দেয়া ওয়াজিব নয়। নিজের সম্পদ থেকে দিলে তা নফল হিসেবে গণ্য হবে এবং সেটার গোশত নিজেরা খেতে পারবেন।
খুলনা গেজেট/এএজে